নন্দিত অভিনেতা সালেহ আহমেদ। দীর্ঘ কয়েকবছর ধরেই অসুস্থ তিনি। অর্থ সংকটে অবহেলা অনাদরেই দিনাতিপাত করছিলেন। প্রায় সাত বছর আগে তিনি ব্রেন স্ট্রোক করেন। পাশাপাশি তার ফুসফুস প্রদাহজনিত সমস্যাসহ বাত সমস্যাও রয়েছে। যে কারণে তিনি স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারেন না। এমনকি স্বাভাবিকভাবে হাঁটতেও পারেন না।
অভিনয় থেকে একেবারেই দূরে সরে ছিলেন। কেউ খোঁজ রাখেননি অনেকদিন। লেখক ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদ বেঁচে থাকতে খোঁজ নিতেন, ঝুড়ি ভরতি ফল পাঠাতেন তার প্রিয় অভিনেতার জন্য।
হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর আর কেউ মনেও রাখেননি সেই অভিনেতার কথা। ২১০৬ সালের দিকে বেশ কিছু গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ হয় একসময়ের দাপুটে অভিনেতা সালেহ আহমেদ রাজধানীর উত্তরখানের নিজ বাসভবনে অসুস্থ অবস্থায় নীরবে-নিভৃতে দিন পার করছেন। তারপর থেকেই নাট্যাঙ্গনের অনেকের টনক নড়ে।
অনেকেই দাবি করছিলেন সালেহ আহমেদের চিকিৎসার জন্য সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা করা হোক।
অভিনয় শিল্পী সংঘ সম্প্রতি উদ্যোগ নেয় সালেহ আহমেদের জন্য। অবশেষে সাড়া দিয়ে এই অভিনেতার পাশে দাঁড়ালেন শিল্পী বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সালেহ আহমেদের চিকিৎসার জন্য ২৫ লাখ টাকার অনুদান প্রদান করেছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার সালেহ আহমেদের পরিবার ও অভিনয় শিল্পী সংঘের কার্যনির্বাহী পরিষদের হাতে এই অনুদানের চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম।
সালেহ আহমেদের মতো অসহায় গুণী অভিনেতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন শিল্পী সংঘের নেতা-কর্মীরা। নাট্যাঙ্গনেও অনেকে এই খবরে নতুন সরকার প্রধানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সালেহ আহমেদের জন্ম। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরে চাকরির পাশাপাশি ময়মনসিংহে অমরাবতী নাটমঞ্চের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। স্বাধীনতার আগে বিটিভিতে তিনি নিয়মিত অভিনয় করতেন।
১৯৯১ সালে অবসরে যাওয়ার পর হুমায়ূন আহমেদের নাটকে ও চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। ধারাবাহিক ‘অয়োময়’ নাটক এবং ‘আগুনের পরশমণি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জগতে তার দাপুটে পদচারণা শুরু হয়। এরপর অসংখ্য টিভি নাটক এবং চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।